সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রমজানের সামাজিক শিক্ষা



রমজানের সামাজিক শিক্ষা

রমজান মাস বছরঘুরে আবারও এলো। আবার চলেও যাবে। আমরা কী শিক্ষা নিচ্ছি রমজান থেকে? কেন এলো এই মাস? মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যেন তোমরা আল্লাহভীতি অর্জন করতে পার’ (সূরা বাকারা : ১৮৩)। রমজানে আল্লাহভীতি অর্জন করাটাই মুখ্য। কারণ, আমাদের সমাজের মানুষ যদি আল্লাহকে ভয় পেতো, তাহলে যাবতীয় অন্যায় থেকে বিরত থাকতো। এই যে গুম, খুন, ধোঁকাবাজি, বিভিন্ন কৌশলে অপরকে ঠকানো, স্বার্থ উদ্ধারের নেশায় বিপথগামী হওয়া সবই বন্ধ হতো আল্লাহভীতি থাকলে। মানুষ যদি ভাবতো, সবই আল্লাহ দেখছেন, পরকালে বিচার হবে-তাহলে অন্যায় কর্মটি করার  চিন্তা করতো না। এই উপলব্ধি নেই বলে রক্ষক আজ ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। ফলে চারদিকে চলছে সামাজিক অনাচার। শিক্ষক ক্লাসে না পড়িয়ে প্রশ্ন ফাঁসের ধান্ধা করেন। ব্যবসায়ী দরদামের সময় ভালো জিনিস দেখিয়ে বিক্রির সময় দিচ্ছেন খারাপ জিনিস। ফলে মেশাচ্ছেন ফরমালিন। রাজনীতিবিদরা মঞ্চে যা বলছেন, ব্যক্তি জীবনে তা পালন করছেন না। সমাজপতিরা টাকার  বিনিময়ে নিচ্ছেন জালিমের পক্ষে অবস্থান। ডাক্তার অধিক উপার্জনের আশায় অপ্রয়োজনেও অপারেশনে বাধ্য করছেন রোগীকে। অফিসার ফাইল আটকিয়ে ঘুষ দিতে বাধ্য করছেন। দুর্নীতি দমন ও সন্ত্রাস দমনকারীরা নিজেরাই তা করছেন ভিন্ন স্টাইলে। এসব কারণে বিনষ্ট হচ্ছে সামাজিক স্থিতিশীলতা। আর রমজান আমাদের মাঝে এসেছে সেই সামাজিক স্থিতিশীলতা সংরক্ষণে বড় রক্ষাকবজ হিসেবে। একমাস দিনের বেলা পানহার ও কামাচার ছাড়াও যাবতীয় অন্যায়কে ছেড়ে দেওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে পারলে বাকী ১১ মাস তার প্রভাব ব্যক্তি থেকে সামাজিক জীবনে থাকবে। আবার আসবে এই মাস। আবার হবে প্রশিক্ষণ।
আল্লাহর নিকট ওই ব্যক্তিই বেশি সম্মানিত, যিনি বেশি আল্লাহভীরুমূলত আল্লাহর ভয়ে আমরা সিয়াম সাধনা করি। আমরা অভুক্ত ব্যক্তির না খেয়ে থাকার করুণ অবস্থাটি উপলব্ধি করতে পারি। এটিও রমজানের একটি মৌলিক সামাজিক শিক্ষা।
জীবনের সকল পাপ মোচনের সময় পবিত্র রমজান মাস। পাপাচারে ভরপুর আমাদের এই জীবনকে পাপমুক্ত করতে রমজান এনে দিয়েছে এক অপূর্ব সুযোগ। প্রতিটি নফল কাজে ফরজের সমান সওয়াব, প্রতিটি ফরজ ৭০টি ফরজের সমান সওয়াব, হাজার মাসের ইবাদত বন্দেগীর সওয়াব এক রাত্রে (লাইলাতুল কদরে), শয়তানকে বন্দি করে রাখার ফলে ভালো কাজের প্রতিযোগিতা করার চমৎকার সুযোগ, রোজাদারকে ইফতার করালে রোজার সমান সওয়াব লাভ প্রভৃতি যেন পরওয়ারদিগারের পক্ষ থেকে এক রহমতের স্রোতধারা । আমরা সেই সুযোগটা কেন নিব না ? মুসলিম শিক্ষকগণ এই একমাসে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করানোর পাশাপাশি নামাজ-রোজার নিয়ম-কানুন, দোয়া-দরূদ, প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল শিক্ষা দিয়ে লাভ করতে পারেন অফুরন্ত সওয়াবতেমনি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ আল্লাহভীতি অর্জনের পথ খুঁজে নিয়ে সৎকর্মগুলো সম্পাদন করতে পারেন। এই মাসে যেন আমরা ব্যক্তিজীবনে আল্লাহভীতি অর্জনে সফল হই। তাহলে সামাজিক জীবন হয়ে উঠবে অনেক সুন্দর। সেই সুন্দর একটি স্থিতিশীল সমাজ ও সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দ্রষ্টাগণ রমজানকে কাজে লাগাতে পারেন মোক্ষম সুযোগ হিসেবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

‘হুদ হুদ’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত

ঘূর্ণিঝড় ‘ হুদ হুদ ’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি অবস্থান করছে পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব মধ্যবঙ্গোপসাগর এলাকায়। ·          অগ্রসর হচ্ছে ‘ হুদ হুদ ’, সাগরে সতর্কতা সংকেত ·            ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম , কক্সবাজার , মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার বুলেটিনে এ তথ্য দেওয়া হয়। এতে বলা হয় , ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে , কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে , মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৭০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি থেকে ...

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের সম্ভাব্য পরিণতি!!!

সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দিলে আমরা যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি ➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖ শুধুমাত্র লাইক, কমেন্ট, শেয়ার, কপিই নয়! সম্ভব হলে লিফলেট ছেপে লেখাটি ছড়িয়ে দিন!! : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে সমস্যা কোথায়? প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছি, সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন আসছে সব শ্রেণী থেকে। প্রথম কথা হচ্ছে, কেউ আমার হাত কাটলেও ব্যথা পাই, আঙুল কাটলেও। কারণ হাত-পা সবই আমার! ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠিত নাই বলে সংবিধান থেকেও মুছে দিতে হবে? হাত কাটা রুখতে পারি নি বলে পা কাটারও সুযোগ দেবো? কারো শরীরে অনুভূতি না থাকলে সেটা তার ব্যাপার, আমি কালিমা পড়েছি, দ্বীনের যে কোন বিষয়ে আঘাত আসলে আমার কলিজায় লাগে! এবার আসল কথায় ফিরে যাই; ক. ইসলামী শরী’আহ হচ্ছে কোন বিধান পালন না করলে আপনি গুনাহগার, বেঈমান নন, কিন্তু অস্বীকার করলে বেঈমান। সংবিধান থেকে সরিয়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে আপনি অস্বীকার করছেন! খ. বুদ্ধিমানদের কাজ হচ্ছে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া, আপনি কামাল আতার্তুকের তুরস্কের ইতিহাস পড়ুন, বুঝবেন কেন আমাদের এতো মাথাব্যথা! গ. প্রধানমন্ত্রী তনয় ও আইটি উপদেষ্টা জয় সাহেবের সে বক্তব্...
ইসরাইলি পণ্যকে হালাল বলা , মাজহাব মানা হারাম ও শিরক বলা সহ আরও আনেক লাগামহীন কথার নায়ক ইহুদীদের দালাল এই ইবলিস- কে একটু শিক্ষা দিয়ে আসুন । https://www.facebook.com/md.rohan.7359447?ft[ego_id]=100007949353950&ft[qid]=6035260132232542925&ft[mf_story_key]=627004182696301145&ft[ei]=&ft[fbfeed_location]=1&ft[insertion_position]=1&__md__=1