ফিলিস্তিনি ভূখনড গাজায় ইহুদি ইসরাইলের বর্বর বিমান ও স্থল হামলার ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ইসরাইলের বেশুমার হত্যাকা-ের পাশাপাশি পানি ও বিদ্যুৎ সংকট এবং এর সাথে যুক্ত হয়েছে উদ্বাস্তু সমস্যা- সব মিলিয়ে মানবিক বিপর্যয়কে তীব্রতর করে তুলছে। অব্যাহত ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে তাই বিশ্বের সর্বত্র বিবেকবান ও শান্তিপ্রিয় মানুষ প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধে জাতিসংঘকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা। গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে তারা এ দাবি জানায়। যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করছেন এমন ইসরাইলি ছাত্রছাত্রীরাও এতে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রে আরব ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও নিউইয়র্কের জন জে কলেজের ক্রিমিনাল জাস্টিসের ছাত্রী মারিয়াম করিম সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই সমাবেশের ডাক দেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রিটেন, ইটালি ও যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন এই বিক্ষোভ-সমাবেশে। তারা গাজায় ইসরাইলের হামলার তীব্র নিন্দা এবং হত্যা বন্ধে জাতিসংঘকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
ইসরাইলি ছাত্রছাত্রীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, সেদেশের সন্তান হলেও গাজায় এই বর্বর হামলাকে তারা সমর্থন করেন না। তারা বলেন, ফিলিস্তিনি মুসলমানরাও তাদের ভাই, বন্ধু ও প্রতিবেশী। তাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে এবং সে অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে হবে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বলা হয়, গাজায় আর কতো ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীর প্রাণ গেলে জাতিসংঘের মতো বিশ্বসংস্থা সোচ্চার হবে? সমাবেশে বক্তারা বলেন, শিশু ও নারীদের ওপর বর্বরোচিত হামলাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কর্মকা- বিবেচনা করে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। অপর এক খবরে বলা হয়, গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত হামলার ফলে সেখানে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। গাজা এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজায় ভয়াবহ পানি সংকট দেখা দিয়েছে এবং সেখানকার জনগণ বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে। এদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইল সেনাবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার জন্য বাইরে থেকে সৈন্য সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নতুন করে হামলা চালানোর কাজে তাদের ব্যবহার করা যায়। ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে ইউরোপে সেনা সংগ্রহের জন্য যে তৎপরতা চলছে তা বন্ধ করতে ব্রিটেনে আরব মানবাধিকার সংস্থা সম্প্রতি লন্ডনসহ ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশের প্রতি আহবান জানিয়েছে। ফিলিস্তিনের অনলাইন ভিত্তিক একটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ফিলিস্তিনিদের হত্যায় অংশ নেয়ার জন্য ইসরাইলের কয়েকটি সংস্থা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে সৈন্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে। বিভিন্ন খবরে জানা গেছে, ইসরাইলের কয়েকটি সংস্থা ইউরোপীয় সরকারগুলোর কোনা বাধা ছাড়াই প্রকাশ্যে ইউরোপ থেকে সেনা সংগ্রহের চেষ্টা করছে। ফিলিস্তিনের একটি সূত্র জানিয়েছে, সেনা সংগ্রহের জন্য ৩০টি দেশে ইসরাইল দফতর খুলেছে এবং সেখানে কর্মচারী নিয়োগ করেছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন