সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিন ; অবরুদ্ধ মানবতা


জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে অবরুদ্ধ গাজাবাসী


ইসরাইলি হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে গাজার বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে। গাজায় গতকাল শনিবার ইসরাইলের নতুন করে শুরু হওয়া বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে। এই নিয়ে গত ১২ দিনে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ পেরিয়েছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর বিমান হামলায় গতকাল শনিবারও আরও প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে স্থল অভিযানসহ ত্রিমুখী হামলা শুরুর পর তা আরো জোরদার করার হুমকি দিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলের স্থল, নৌ ও বিমান হামলার মুখেও অনড় অবস্থানে রয়েছে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামী সংগঠন হামাস। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুদ্ধ বিরতির জন্য আলোচনা করতে মিসর ও তুরস্ক সফর করেছেন। গত শনিবার সকালে খান ইউনিসের একটি মসজিদে ইসরাইলি হামলায় এক নারীসহ সাতজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৬ জনে। হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত এক সেনাসহ দুই ইসরাইলি নিহত হয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘ বলছে যে যুদ্ধ বন্ধ করতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন গতকাল শনিবার ওই অঞ্চল সফরে যান। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিহত ফিলিস্তিনিদের নাম পড়ে শুনিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর। এক পর্যায়ে তার চোখের কোণ গড়িয়ে পানি ঝড়তে দেখা যায়। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতিতে উভয় পক্ষকে রাজি করানোর লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আজ ওই অঞ্চলে সফরে যাচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।

গাজায় ইসরাইলের প্রায় একতরফা হামলার গতকাল দ্বাদশ দিন পার হলো। ভোরে খান ইউনিস শহরে একটি মসজিদের বাইরে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। এতে সাতজন নিহত হয়। এরপর গাজায় আরও হামলা হয়। এতেও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা নিয়ে গত ১২ দিনে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে হাজারো ফিলিস্তিনি। হতাহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে। অপরদিকে চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত দুজন ইসরাইলি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকজন।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে গত শুক্রবার বলা হয়েছে, চলমান সহিংসতা বন্ধে উভয় পক্ষকে একটি সমঝোতায় আনার লক্ষ্যে সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন আজ ওই অঞ্চল সফরে যাচ্ছেন। নিজেকে রক্ষার ব্যাপারে ইসরাইলের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি এড়াতে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জুলাই থেকে ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইসরাইলের সর্বশেষ হামলার সূত্রপাত ইসরাইলি তিন কিশোরকে সম্প্রতি অপহরণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। হামাসই ওই ঘটনা ঘটায় বলে মনে করে ইসরাইল। তবে হামাস তা অস্বীকার করে। পরে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে একইভাবে হত্যা ও অপহরণের পর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। এরপর গাজা থেকে রকেট ছোড়া হচ্ছে- এমন দাবি তুলে অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ শুরু করে ইসরাইল।

অপর এক খবরে বলা হয়, তুরস্কে ইসরাইল বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে নিজের দূতাবাসকর্মী কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল আবিব। গত শুক্রবার আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে ইসরাইলের দূতাবাস ও কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছে তুর্কি বিক্ষোভকারীরা। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর ওপর ইহুদিবাদী বর্বরোচিত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্কে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
আঙ্কারায় ইসরাইলি দূতাবাসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইহুদিবাদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিবারম্যানের নির্দেশে দূতাবাসকর্মীর সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বেশ কিছু দূতাবাসকর্মীকে তেলআবিবে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তুরস্কে ইসরাইলি কূটনৈতিক মিশনগুলোকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া না হলেও দূতাবাস কর্মীর সংখ্যা ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে বলে তিনি জানান। ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবৈধ এ দেশটির দূতাবাস ও কনস্যুলেটকে বিক্ষোভকারীদের হামলার হাত থেকে রক্ষা করতে না পারার জন্য আঙ্কারাকে অভিযুক্ত করেছে। আজ তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ইসরাইলি কনস্যুলেটে হামলা চালায়। এছাড়া, রাজধানী আঙ্কারায় ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা চালায় বিক্ষোভকারীরা। ইস্তাম্বুলে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও পানি কামান ব্যবহার করলেও আঙ্কারার ঘটনা পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। ওয়েবসাইট।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের সম্ভাব্য পরিণতি!!!

সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দিলে আমরা যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি ➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖ শুধুমাত্র লাইক, কমেন্ট, শেয়ার, কপিই নয়! সম্ভব হলে লিফলেট ছেপে লেখাটি ছড়িয়ে দিন!! : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে সমস্যা কোথায়? প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছি, সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন আসছে সব শ্রেণী থেকে। প্রথম কথা হচ্ছে, কেউ আমার হাত কাটলেও ব্যথা পাই, আঙুল কাটলেও। কারণ হাত-পা সবই আমার! ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠিত নাই বলে সংবিধান থেকেও মুছে দিতে হবে? হাত কাটা রুখতে পারি নি বলে পা কাটারও সুযোগ দেবো? কারো শরীরে অনুভূতি না থাকলে সেটা তার ব্যাপার, আমি কালিমা পড়েছি, দ্বীনের যে কোন বিষয়ে আঘাত আসলে আমার কলিজায় লাগে! এবার আসল কথায় ফিরে যাই; ক. ইসলামী শরী’আহ হচ্ছে কোন বিধান পালন না করলে আপনি গুনাহগার, বেঈমান নন, কিন্তু অস্বীকার করলে বেঈমান। সংবিধান থেকে সরিয়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে আপনি অস্বীকার করছেন! খ. বুদ্ধিমানদের কাজ হচ্ছে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া, আপনি কামাল আতার্তুকের তুরস্কের ইতিহাস পড়ুন, বুঝবেন কেন আমাদের এতো মাথাব্যথা! গ. প্রধানমন্ত্রী তনয় ও আইটি উপদেষ্টা জয় সাহেবের সে বক্তব্...

‘হুদ হুদ’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত

ঘূর্ণিঝড় ‘ হুদ হুদ ’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি অবস্থান করছে পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব মধ্যবঙ্গোপসাগর এলাকায়। ·          অগ্রসর হচ্ছে ‘ হুদ হুদ ’, সাগরে সতর্কতা সংকেত ·            ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম , কক্সবাজার , মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার বুলেটিনে এ তথ্য দেওয়া হয়। এতে বলা হয় , ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে , কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে , মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৭০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি থেকে ...

ভন্ড-বেদাতীর গোমরফাক ১ম পর্ব

রাসূল সা. হাজির নাজির কিনা ? প্রশ্ন: আস সালামু আলাইকুম , আশা করি ভাল আছেন , আমার প্রশ্ন , নবী করিম সা. হজির ও নাজির কি না ? যারা পক্ষে বলে তাদের দলিল হলো সূরা আহযাবের একটি আয়াতের শাহদান শব্দ। এই শব্দের ব্যখ্যা কি ? মেহেরবানী করে দলিল সহ উত্তর দিবেন।   উত্তর: হাজির ও নাজির শব্দদুটো আরবী। হাজির অর্থ বিদ্যমান বা উপস্থিত। আর নাজির অর্থ দ্রষ্টা। যখন এ শব্দ দুটিকে এক সাথে মিলিয়ে   ব্যবহার করা হয় তখন অর্থ হয় ঐ স্বত্তা যার অস্তিত্ব এক স্থানে সীমাবদ্ধ নয় , বরং তার অস্তিত্ব একই সময়ে গোটা দুনিয়াকে বেষ্টন করে রাখে এবং দুনিয়ার প্রত্যেকটি জিনিসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবস্থা তার দৃষ্টির সামনে থাকে। পূর্বোক্ত ব্যখ্যা অনুসারে হাজির নাজির এটি একমাত্র আল্লাহ তায়ার সিফাত এবং তার জন্যই প্রযোজ্য , এমনকি নবী সা. বা কোন ওলী সব জায়গায় হাজির নাজির হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালার সিফাতের সঙ্গে বান্দাকে মিলানো কুফর , শিরক ও চরম ভ্রষ্টতা। বিদাতীদের আক্বীদা মতে শুধু হুজুরে পাক সা. নন , বরং বুজুরগানে দ্বীনও পৃথিবীর সবকিছুকে হাতের তালুর মত দেখতে পান। তারা দূরের ও কাছের আওয়াজ শুনতে পান এবং হাজার হাজার মা...